Ph:01717-555.
নান্না মিয়ার পরিচয়:
নান্না মিয়ার বাবা ছিলেন একজন গাড়োয়ান। ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে কোনোরকমে সংসার চালাতেন। সংসারের হাল ধরতে নান্নাকে কাজে লেগে যেতে হয় একেবারে শৈশবেই। প্রথমে তিনি পাতার বিড়ি বানানোর কাজ নেন। এই কাজ করে প্রতিদিন পেতেন দেড় টাকা। তারপর হোটেলে কাজ শুরু করেন। শেষে মাওলানা দ্বীন মোহাম্মদ সাহেবের খেদমতের কাজ নেন। তিনিই নান্নাকে উৎসাহিত করেন বাবুর্চি হওয়ার জন্য। এরপর ঢাকার বিখ্যাত পেয়ারা বাবুর্চির তত্তাবধানে কাজ শিখতে শুরু করেন নান্না মিয়া।
১৯৫২-৫৩ সালের দিকে ঢাকার মৌলভীবাজারে সর্বপ্রথম মোরগ পোলাও বিক্রি করতে শুরু করেন নান্না মিয়া। বাসা থেকে কয়েকটা মোরগ আর এক হাঁড়ি পোলাও নিয়ে বসতেন ছোট্ট একটি দোকানে। চাটাইয়ে বসে খেত লোকজন। তখন প্রতি প্লেটের দাম ছিল দুই টাকা। পোলাও ও রোস্টের সঙ্গে থাকত সুস্বাদু ঝোল। পুরান ঢাকার অধিবাসীরা এখানে খেতে আসতেন নিয়মিত।
১৯৭৩-৭৪ সালে সেই আস্তানা ছেড়ে বেচারাম দেউড়িতে দোকান দেন তিনি। ছোট্ট একটি দোকানে বিক্রি হয় নান্না মিয়ার মোরগ পোলাও। সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে দোকানের শ্রী। চাটাইয়ের বদলে এখানে এসেছে চেয়ার-টেবিল। খাবারের ধরনেও এসেছে পরিবর্তন। ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত নিজ হাতেই রান্না করতেন বাবুর্চি নান্না মিয়া। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ার পর তার শাগরেতরা বংশানুক্রমিকভাবে রান্নার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। শুরু থেকে বাছাই করা যেসব মসলা নান্না মিয়া ব্যবহার করতেন, আজো সেগুলোই ব্যবহার করা হয়।
দূর-দুরান্ত থেকে ক্রেতারা আসেন মজাদার মোরগ পোলাওয়ের স্বাদ নিতে। শাহি মোরগ পোলাও ছাড়াও এখানে আরও পাওয়া যায় কাচ্চি বিরিয়ানি, খিচুড়ি, ফিরনি, টিকিয়া, লাবাং, বোরহানির মতো মুখরোচক সব খাবার।